Сийлайи раҳм

Мақолалар Маълумотлар
Унвон: Сийлайи раҳм
тил: Бангал тили
Ёзувчи: Ахтаруззамон Муҳаммад Сулаймон
Таҳрир: Абу Бакр Закарийё
Нашр қилувчи манба: Риёз шаҳри Рабва маҳалласи диний тарғибот идораси
Киритилган вақт: 2007-08-20
Линк: http://IslamHouse.com/52060
Ушбу тема қуйидаги қисмлар орасида мавзуга кўра қўйилган
Формати ( 2 )
1.
আত্মীয়তার সম্পর্ক
301.7 KB
: আত্মীয়তার সম্পর্ক.pdf
2.
আত্মীয়তার সম্পর্ক
3.7 MB
: আত্মীয়তার সম্পর্ক.doc
Тафсилий намуна

 

আত্মীয়তার সম্পর্ক 

একটি সমাজ কতটা সুখী ও সুস্থ তা নির্ধারণের একটি উপায় সেই সমাজের সম্পর্কগুলো বিচার করা : সেই সমাজ ও সংস্কৃতি কীভাবে তার সম্পর্কগুলো সাজাচ্ছে, সামাজিক সম্পর্কগুলোকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার মূল্যবোধগুলো কি ? সম্পর্ক একটা খুবই নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাপার। সমাজ ও সংস্কৃতির অনিবার্য উপাদান। সামাজিক সম্পর্কগুলো যত উন্নত হবে তার সাপেক্ষেই গড়ে উঠবে সে সমাজের উন্নতি-সফলতা-সুখ। তাই পৃথিবীর জ্ঞানকাণ্ডগুলো সম্পর্কের বিষয়টিকে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যু বলে বিচার করে। এবং এই বিবেচনা থেকেই তাকে পাঠ করে অভ্যস্ত। ইসলাম কোন বিমূর্ত মেটাফিজিক্যাল ধর্ম নয়, ইসলাম খুবই বাস্তবসম্মত এবং একই সাথে ইহজাগতিক ও পারোকালিক ধর্ম— এই দাবির পক্ষে অনেক প্রমাণের মধ্যে একটি শক্তিশালী প্রমাণ হতে পারে, ইসলামের সমাজ ও সামাজিক-সম্পর্ক ভাবনা। আত্মীয়তার বন্ধন নিছক কোন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় নয়। বরং ইসলামের ভাবনায় তা  ধর্মদর্শেনর মৌলিক বিষয়সমূহের অন্যতম একিট। নামাজ-রোজা-হজ্ব-যাকাতের প্রধান এবাদতগুলোর ন্যায় গুরুত্ব দিয়ে ইসলাম বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। তার ধরন-স্বভাব-মাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তা রক্ষা ও ক্ষুণ্ন করার সাপেক্ষে শাস্তি ও প্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছে। ইসলাম মনে করে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে চায় তাকে অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। কারণ যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করেন। যে আত্মীয়তা ছিন্ন করে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। যে ব্যক্তি জান্নাতে যেতে চায়, ইসলাম মনে করে, নামাজ-রোজা আদায় করার পাশাপাশি তাকে এইসব সামাজিক সম্পর্কগুলো রক্ষা করতে হবে। কারণ, কি আমল করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে - এক সাহাবীর এই প্রশ্নের উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন : ‘আল্লাহর ইবাদত কর, তার সাথে শরীক করো না, নামাজ ভাল ভাবে আদায় কর এবং যাকাত দাও। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা কর। আল্লাহ তায়ালা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন:

 والذين يصلون ما أمر الله به أن يوصل - سورة الرعد : 21

এবং আল্লাহ যে সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন তারা তা বজায় রাখে।’ সুরা - রাআদ : আয়াত-২১

এবং ইসলাম তাগিদের সাথে নিকট জনের অধিকার আদায়ের নির্দেশ দেয় :

وءات ذا القربى حقه - سورة الإسراء :26

এবং আত্মীয়কে তার প্রাপ্য অধিকার দাও। [আল ইসরা-আয়াত -২৬]

হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ তা’আলা আত্মীয়তার বন্ধনকে খেতাব করে বলেন: যে তোমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব। আর যে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। [বুখারী -৫৫২৯] ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা খুবই জঘন্য অপরাধ। এর কঠিন পরিণতি সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় সতর্ক করা হয়েছে। কোরআনের একস্থানে সম্পর্ক ছিন্ন করাকে ফাসাদ এবং পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে :

فهل عسيتم إن توليتم أن تفسدوا فى الأرض و تُقطعوا أرحامكم - سورة محمد: 22

তাহলে কি এমন হতে পারে যে, ক্ষমতা পেলে তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে ‌। [সুরা মুহাম্মদ -২২] নবী করীম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [বুখারী, হাদীস নং: ৫৫৩৫]

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ফযিলত

আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার অনেক ফযিলত আছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণগুলো উল্লেখ করছি :

. যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে, তার দাবিগুলো পূর্ণ করে তার জীবন হয়ে উঠে রকতপূর্ণ, সমৃদ্ধ স্বচ্ছল এবং দীর্ঘায়ু লাভের উপযোগী। হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন : ‘যে ব্যক্তি স্বচ্ছলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে সে যেন আত্মীয়তা বজায় রাখে।’ [বুখারী, হাদীস নং : ৫৫২৭]

. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা জান্নাত লাভের সহায়ক। আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, জনৈকব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যা জান্নাতে প্রবেশ করাবে। উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বললেন:

تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتصل الرحم - رواه البخاري: 1309

আল্লাহর ইবাদত কর, তার সাথে কোন কিছু শরীক করো না, নামাজ ভাল করে আদায় কর এবং যাকাত দাও। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখ। [বুখারী, হাদীস নং ১৩০৯]

. পার্থিব ও অপার্থিব সুখ-সৌভাগ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা।

আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার স্তরসমূহ

এ সম্পর্ক বজায় রাখার কিছু স্তর রয়েছে। সর্বোচ্চ স্তর হল: জান-মাল দ্বারা সাহায্য করা। এবং কল্যাণ কামনা করা। আর সর্বনিম্ন স্তর হল, সালাম দেয়া। এই দুইটির মধ্যখানে আরো অনেক স্তর রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম এরশাদ করেন :সালাম এর মাধ্যমে হলেও তোমরা তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ।

এর সর্বোচ্চ স্তর হল যে ব্যক্তি সম্পর্ক ছিন্ন করে, নিজে উদ্যেগী হয়ে তার সাথে সম্পর্ক পুনর্প্রতিষ্ঠা করা এবং অচ্ছেদভাবে এ সম্পর্ক রক্ষা করে যাওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেন:

ليس الواصل بالمكافئ ولكن الواصل الذي إذا قطعت رحمه وصلها - رواه البخاري : 5532

সম্পর্কে বিনিময়ে সম্পর্ক স্থাপনকারী আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী নয়। বরং আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী হল সে যে সম্পর্ক ছিন্নকারীর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। [বুখারী , হাদীস নং : ৫৫৩২]

এর অর্থ হচ্ছে, কেউ আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে আমি নিজ থেকে তা পুনর্প্রতিষ্ঠা করব এবং তা অব্যাহত রাখব; মানুষের মাঝে যখন এমন উদারদা-প্রবণ সম্পর্কচেতনা তৈরি হবে তখনই মূলত সফলভাবে এই সব সামাজিক সম্পর্কগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে। এবং তা ফলদায়ক হবে।

সম্পর্কের সংজ্ঞা

আত্মীয়তার সম্পর্কের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। তার স্বভাব, ধরন, কাল, অঞ্চল ও পাত্র ভেদে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। নিদিষ্ট কোন অঞ্চলের সমাজ-সংস্কৃতির সঠিক রীতি যাকে সম্পর্ক রক্ষা-ক্ষুণ্ন করা বলে, বিবেচনা করে, সেই সমাজে সম্পর্কের বিচার সেই রীতি অনুসারেই হবে।
আত্মীয়তার পার্থক্য ও মর্যাদা অনুযায়ী সম্পর্কের ধরন ও মাত্রায় পার্থক্য ঘটে থাকে। উদাহরণত পিতার সম্পর্ক আর দূর সম্পর্কে চাচাত ভাইয়ের সম্পর্ক এক হতে পারে না। অবস্থা অনুযায়ী এ সম্পর্কের পার্থক্য ঘটে থাকে। রুগি এবং অসহায়ের সম্পর্ক ধনী এবং সুস্থের সমান হয় না।
বড়-ছোটর সম্পর্কও এক হয় না। অনুরূপভাবে স্থান অনুযায়ী সম্পর্কের মধ্যে পার্থক্য ঘটে। যে দেশে অবস্থান করছে আর যে প্রবাশজীবন যাবন করছে তাদের সম্পর্ক এক রকম হয় না। সম্পর্কের নিদর্শন হল পরস্পরের খোঁজখবর নেওয়া, সম্ভাব্য যাবতীয় উপায়ে যোগাযোগ রাখা। সাধ্য অনুসারে সহযোগিতা করা ইত্যাদি।

 

ওয়েব গ্রন্থনা : আবুল কালাম আযাদ আনোয়ার /সার্বিক যত্ন : আবহাছ এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি, বাংলাদেশ।

Go to the Top