অমুসলিমদের কাছে শূকরের গোশত জাতীয় হারাম বস্তুর বেচা-বিক্রি কি বৈধ?

ফতোয়া পেইজ পরিচিতি
শিরোনাম: অমুসলিমদের কাছে শূকরের গোশত জাতীয় হারাম বস্তুর বেচা-বিক্রি কি বৈধ?
ভাষা: বাংলা
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: শায়খ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রশ্নটি হল এই: (আমি একটি নৌযান এজেন্সিতে কাজ করি, চলাচলকারী জাহাজগুলোকে আমরা সেবা দিই। এ জাহাজগুলোর অধিকাংশই ভিনদেশী এবং এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা অমুসলিম। কম্পানির মালিক কখনো কখনো এসব জাহাজে শূকরের গোশত বিক্রি করে থাকেন। এর দ্বারা যে লাভ হয় তা আমাদের মাঝে বন্টন করে দেন। আমরা তা গ্রহণ করি এ হিসেবে যে অমুসলিমদের জন্য শূকরের গোশত বিক্রি করা জায়েজ, হারাম নয়। অমুসলিমদের কাছে শূকরের গোশত বিক্রি করা হরাম এ মর্মে কুরআন সুন্নায় কোনো টেক্সট আসে নি। তদ্রূপভাবে মদের সাথেও শূকরের গোশতের কোনো তুলনা চলে না; কেননা শূকরের গোশত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামের যুগেও পাওয়া যেত। তাই তিনি যদি তা হারাম করতেন ও তার প্রতি লানত করতে চাইতেন তা হলে অবশ্যই করতেন। সে কথা যাক। আমাদের কোম্পানির মালিক শূকরের গোশত বিক্রির যে পয়সা আমাদেরকে দেন তা কী হালাল না হারাম? বিষয়টি কি এরকম যে আমরা যেহেতু শূকরের গোশত বিক্রয়ে শরিক নই, বরং কোম্পানির মালিক আমাদেরকে দান হিসেবে দেন, তাই এ দান গ্রহণ করা কি আমাদের জন্য বৈধ? আমরা তো জানি এর উৎস কি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কি সরাসরি, দ্ব্যর্থহীন, অকাট্য কোনো হাদীস এসেছে যেখানে তিনি শূকরের গোশত অমুসলিমদের কাছে বিপনন করা হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। আর শূকরের গোশত তো আহলে কিতাবদের জন্য হালাল।)
সংযোজন তারিখ: 2009-05-03
শর্ট লিংক: http://IslamHouse.com/206178
:: এই শিরোনামটি বিষয় অনুসারে নিম্নের ক্যাটাগরিগুলোতে বিন্যস্ত ::
এই ‘বিষয় পরিচিতি’টি নিম্নোক্ত ভাষায় অনূদিত:: আরবী
বিস্তারিত বিবরণ

প্রশ্ন আমি একটি নৌযান এজেন্সিতে কাজ করি, চলাচলকারী জাহাজগুলোকে আমরা সেবা দিই। এ জাহাজগুলোর অধিকাংশই ভিনদেশী এবং এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা অমুসলিম। কম্পানির মালিক কখনো কখনো এসব জাহাজে শূকরের গোশত বিক্রি করে থাকেন। এর দ্বারা যে লাভ হয় তা আমাদের মাঝে বন্টন করে দেন। আমরা তা গ্রহণ করি এ হিসেবে যে অমুসলিমদের জন্য শূকরের গোশত বিক্রি করা জায়েজ, হারাম নয়। অমুসলিমদের কাছে শূকরের গোশত বিক্রি করা হরাম এ মর্মে কুরআন সুন্নায় কোনো টেক্সট আসে নি। তদ্রূপভাবে মদের সাথেও শূকরের গোশতের কোনো তুলনা চলে না; কেননা শূকরের গোশত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামের যুগেও পাওয়া যেত। তাই তিনি যদি তা হারাম করতেন ও তার প্রতি লানত করতে চাইতেন তা হলে অবশ্যই করতেন। সে কথা যাক। আমাদের কোম্পানির মালিক শূকরের গোশত বিক্রির যে পয়সা আমাদেরকে দেন তা কী হালাল না হারাম? বিষয়টি কি এরকম যে আমরা যেহেতু শূকরের গোশত বিক্রয়ে শরিক নই, বরং কোম্পানির মালিক আমাদেরকে দান হিসেবে দেন, তাই এ দান গ্রহণ করা কি আমাদের জন্য বৈধ? আমরা তো জানি এর উৎস কি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কি সরাসরি, দ্ব্যর্থহীন, অকাট্য কোনো হাদীস এসেছে যেখানে তিনি শূকরের গোশত অমুসলিমদের কাছে বিপনন করা হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। আর শূকরের গোশত তো আহলে কিতাবদের জন্য হালাল।

উত্তর আলহামদু লিল্লাহ
প্রথমত : ইলম ব্যতীত আল্লাহর দ্বীনের কোনো বিষয় সম্পর্কে ফতোয়া দেয়া কারো পক্ষে বৈধ নয়। এ ধরনের পদক্ষেপের ভয়াবহতা সম্পর্কে ব্যক্তিকে অব্শ্যই ভালভাবে ওয়াকেবহাল হতে হবে। এ ধরনের কাজ আল্লাহ তাআলা হারাম করে দিয়েছেন, ইরশাদ হয়েছে:

﴿ قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَ ﴾ الأعراف/33


(বল, আমার পালনকর্তা কেবল অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেনে যা প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহ, অন্যায়-অত্যাচার, আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে আংশীদার করা, তিনি যার কোনো সনদ অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা, যা তোমরা জান না।)

এতএব বিশুদ্ধ প্রমাণ ব্যতীত যদি কেউ বলে, এটা হালাল, ওটা হারাম; তবে তা মারাত্মক অন্যায় হবে। ইরশাদ হয়েছে:


﴿ وَلا تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَذَا حَلالٌ وَهَذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوا عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لا يُفْلِحُونَ ﴾ النحل/116


( আর তোমাদের জিহ্বা দ্বারা বানানো মিথ্যার উপর নির্ভর করে বলো না যে, এটা হালাল এবং এটা হারাম, আল্লাহর উপর মিথ্যা রটানোর জন্য। নিশ্চয় যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটায়, তারা সফল হবে না।)

দ্বিতীয়ত: মুসলিম অথবা অমুসলিম কারও ক্ষেত্রেই শূকরের গোশত বিক্রয় করা হালাল নয়, তা বরং হারম। এর প্রমাণ:


﴿ قُلْ لا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّماً عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلا أَنْ يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَماً مَسْفُوحاً أَوْ لَحْمَ خِنْزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ أَوْ فِسْقاً أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ ﴾ الأنعام/145


(বল, যা কিছু ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে , তন্মধ্যে আমি কোনো হারাম খাদ্য পাই না কোনো ভক্ষণকারীর জন্য , যা সে ভক্ষণ করে ; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশত এটা অপবিত্র, অথবা অবধৈ যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। )
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি আমাদেরকে শিখিয়েছেন আর তা হল, ( إن الله إذا حرَّم شيئاً حرَّم ثمنه ) ‌অর্থ্যাৎ আল্লাহ যখন কোনো কিছুকে হারাম করেন, তখন তিনি তার মূল্যকেও হারাম করেন। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৪৮৮, শায়খ আলবানী গায়াতুল মুরামে এ হাদীসটি সহীহ বলেছেন (৩১৮) ]

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মক্কা বিজয়ের বছর বলতে শুনেছেন, আর তখন তিনি মক্কায় ছিলেন, যে ( নিশ্চয় আল্লাহ মদ, মৃত, শূকর ও মূর্তি বিক্রয় হারাম করেছেন। প্রশ্ন করা হল, য়্যা রাসূলাল্লাহ, মৃতের চর্বির ব্যাপারে আপনার কি রায়? তা দিয়ে তো জাহাজে প্রলেপ দেয়া হয়, চর্মে তৈল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, বাতি জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হয় । উত্তরে তিনি বললেন, ’ না, ওটা হারাম ‘ , এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ ইহুদিদেরকে নিপাত করুন, আল্লাহ যখন মৃতের চর্বি হারাম করলেন তখন তারা তা গলাল অতঃপর বিক্রয় করে তার মূল্য ভক্ষণ করল। ) বুখারী : ১২১২, মুসলিম: ১৫৮১

ইমাম নববী র. বলেছেন: আর মৃত, মদ ও শূকর, মুসলমানগণ এগুলোর বিপননক্রিয়া হারামের ব্যাপারে ইজমা তথা ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন।
কাযী বলেছেন: এ হাদীসে এটা শামিল রয়েছে যে, যা খাওয়া হালাল নয়, অথবা যার থেকে উপকৃত হওয়া হালাল নয়, তা বিক্রি করাও হালাল নয়, এবং এর মূল্যও ভক্ষণ করা যাবে না। হাদীসের মধ্যে উল্লিখিত চর্বি এর উদাহরণ। [ শরহে মুসলিম:১১/৮]

ইবনে রাজাব আল হাম্বলী মদ বিক্রয় হারাম হওয়ার হাদীসসমূহ উল্লেখ করার পর বলেন: এ হাদীসমূহের মূল বক্তব্য হল: আল্লাহ তাআলা যার দ্বারা উপকৃত হওয়া হারাম করেছেন, তা বিক্রি করা ও তার মূল্য ভক্ষণ করাও হারাম। এ বিষয়টি একটি হাদীসেও স্পষ্টভাবে এসেছে যে, ( আল্লাহ যখন কোনো কিছুকে হারাম করেন, তিনি তখন তার মূল্যকেও হারাম করেন।) এটি একটি ব্যাপক নীতি, যে সব বস্তু দ্বারা উপকৃত হওয়া হারাম তার সবগুলোকেই এ নীতি শামিল করছে। আর এগুলো দুই প্রকার :

প্রথম প্রকার: এমন বস্তু যার মূল বস্তু বাকি থাকা অবস্থায় মানুষ তাকে কাজে লাগাতে পারে, যেমন: মূর্তি । মানুষ মূর্তিকে আল্লাহর সাথে শিরক করার ক্ষেত্রে কাজে লাগায়। আর শিরক সব থেকে বড় জুলুম। এর প্রাসঙ্গিকতায় আসে শিরকপূর্ণ বইপুস্তক, যাদু, বেদআত, গোমরাহি ইত্যাদির বইপুস্তক। তদ্রূপভাবে হারাম ছবি, হারাম খেল-তামাশার বস্তু, গান করানোর উদ্দেশে দাসী ক্রয় ইত্যাদি।

দ্বিতীয় প্রকার: মূল বস্তু ধ্বংস না করে মানুষ যার ফায়দা নিতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যেহেতু ফায়দা নেওয়ার মূল ও বড় বিষয়টিই হারাম সে হিসেবে তার বিক্রি করাও হারাম হবে, যেমন শূকর, মদ ও মৃত বিক্রয় করা হারাম হওয়া। যদিও এর কোনোটি বিপদের সময় সাময়িকভাবে বৈধ হয়ে যায়, উদাহরণত যে ব্যক্তির কোনো গত্যন্তর নেই তার পক্ষে মৃত জন্তুর গোশত খাওয়া, কারও গলায় খাবার আটকে গেলে তা মদ দিয়ে ছাড়ানো - যদি সেখানে মদ ব্যতীত অন্য কোনো তরল পদার্থ না থাকে- মদ দিয়ে আগুন নেভানো ইত্যাদি, এবং শূকরের লোম দিয়ে মালা বানানো, কারও কারও নিকট, শূকরের লোম ও চামড়া দিয়ে উপকৃত হওয়া- যারা এটাকে সঙ্গত মনে করেন। তবে যেহেতু এ ধরনের ফায়দা মূল উদ্দেশ্য নয়, তাই এগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। এগুলোর বিক্রি হারাম। শূকর ও মৃতের বড় উদ্দেশ্য হল তা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা, আর মদের বড় উদ্দেশ্য হল পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা। তাই এই বড় উদ্দেশ্যগুলোকেই নজরে রাখা হয়েছে, অন্যান্য উদ্দেশ্যের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করা হয় নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়টির প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন যখন তাঁকে এই বলে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে (য়্যা রাসূলাল্লাহ, মৃতের চর্বির ব্যাপারে আপনার কি রায়? তা দিয়ে তো জাহাজে প্রলেপ দেয়া হয়, চর্মে তৈল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, বাতি জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হয় । উত্তরে তিনি বললেন, ’ না, ওটা হারাম ‘। [ জামেউল উলুম ওয়াল হেকাম: ১/৪১৫, ৪১৬]

মদ, শূকরের গোশত ইত্যাদি নিয়ে অমুসলিমদের কাছে ব্যবসা করা জায়েজ আছে কি-না এ ব্যাপারে ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে প্রশ্ন করা হলে নিম্নবর্ণিত উত্তর দেওয়া হয়:
খাবার ইত্যাদি আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা দিয়ে ব্যবসা করা জায়েজ নেই, কাফেরদের সাথে হলেও তা জায়েজ হবে না। কেননা হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ( নিশ্চয় আল্লাহ যখন কোনো কিছুকে হারাম করেন, তিনি তার মূল্যকেও হারাম করেন) অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ ও মদ্যপানকারী, মদের বিক্রেতা, ক্রেতা, বহনকারী এবং যার কাছে বহন করে নেয়া হয়, এবং যে এর মূল্য ভক্ষণ করে, যে তা নিংড়ায়, এবং যে তা পরীক্ষা করে এসবকে লানত করেছেন।) [ ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া:১৩/৪৯]

তৃতীয়ত: প্রশ্নকারী বলেছেন,(অমুসলিমদের জন্য শূকরের গোশত বিক্রি করা জায়েজ, হারাম নয়। অমুসলিমদের কাছে শূকরের গোশত বিক্রি করা হরাম এ মর্মে কুরআন সুন্নায় কোনো টেক্সট আসে নি।) এ কথা শুদ্ধ নয়। উপরে এ ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহ, ইজমায়ে উলামা উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ দলিলগুলো সাধারণ, যা মুসলিম এবং কাফের সবার ক্ষেত্রেই বর্তায়; কেননা দলিলগুলোকে সাধারণভাবে হারাম হওয়ার কথা এসেছে, মুসলমান এবং অন্যান্যদের মাঝে এই ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য করা হয় নি।

বরং যদি বলা হয় যে বিক্রয় হারাম হওয়ার কথা মৌলিকভাবে অমুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করেই এসেছে। কেননা মুসলমানরা তো শূকর কেনার প্রশ্নই আসে না। তারা শূকর দিয়ে কী করবে? তারা তো বিশ্বাস করে ও জানে যে আল্লাহ তাআলা সম্পূর্ণভাবে শূকর হারাম করে দিয়েছেন।

তদ্রূপভাবে প্রশ্নকারীর এই বক্তব্যও শুদ্ধ নয় যে, (শূকরের গোশত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামের যুগে ছিল, যদি তিনি তা হারাম করতে ও তার উপর লানত করতে চাইতেন, তিনি তা অবশ্যই করতেন।) কেননা কোনো জিনিস হারাম হওয়ার জন্য এটা শর্ত নয় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলেইহি ওয়াসাল্লামকে ওই জিনিস ব্যবহারকারীর উপর লানত করতে হবে। বরং কেবল নিষেধ করে দেয়া, অথবা তা হারাম বলে ঘোষণা দেয়াই যথেষ্ট, যেমনটি হয়েছে শূকর বিক্রয় হারাম করার ক্ষেত্রে।

চতুর্থত : বিক্রয় লব্ধ টাকার ব্যাপারে বলব যে আপনারা যেহেতু বিষয়টি নাড়ি-নক্ষত্র জানেন তাই উচিত হবে তা প্রত্যাখ্যান করা; কেননা তার পয়সা গ্রহণ করার অর্থ হবে আপনারা তাকে সমর্থন করছেন। পক্ষান্তরে আপনাদের ওয়াজিব হল তাকে নসিহত করা, তাকে বারণ করতে চেষ্টা চালানো, যাতে সে এই হারাম কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজেকে শুধরিয়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি আল্রাহর জন্য কোনো কিছু ছেড়ে দেয় তিনি তাকে তার থেকেও উত্তম বিষয় প্রতিদান হিসেবে দেন।

হাঁ, হারাম হওয়া বিষয়ে জ্ঞান লাভের পূর্বে আপনারা যা নিয়েছেন তাতে আশা করা যায় কোনো অসুবিধা হবে না। সুদ হারাম করার আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন:


﴿ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَى فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ﴾ البقرة/275



(অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার।এবং তার বিষয়টি আল্লাহর নিকট সোপর্দকৃত।)
 

Go to the Top